অ্যাঙ্গোলার ওপেক ছাড়ার সিদ্ধান্তে ফের কমলো তেলের দাম

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ জ্বালানি তেল উত্তোলনকারী দেশ অ্যাঙ্গোলা ওপেক থেকে নিজেদের সদস্যপদ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানানোর পর আন্তর্জাতিক বাজারে ফের হ্রাস পেয়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার চাঙা রাখতে তেল উত্তোলন ও রপ্তানিকারী দেশগুলোর জোট ওপেক গত কয়েক মাস ধরে তেলের উত্তোলন হ্রাসের যে পদক্ষেপ নিয়েছে— মূলত সেটিই অ্যাঙ্গোলার এই সিদ্ধান্তের প্রধান কারণ।

আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের এই দেশটির জ্বালানি তেল বিষয়ক মন্ত্রী দিয়ামান্তিনো এজেভেদো এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ওপেকের নীতি অ্যাঙ্গোলার জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এ কারণে জোট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অ্যাঙ্গোলা।

বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় পুরো বিশ্ব : ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেছেন, বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গণতান্ত্রিক, গ্রহণযোগ্য, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখতে চায় পুরো বিশ্ব।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন ইইউ রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, ‘সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত মতবিনিময় হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও তার টিম খোলামেলা আলোচনায় অংশ নিয়েছেন। নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছি। আমরা আশাকরি গণতান্ত্রিক, গ্রহণযোগ্য ও অংগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। পুরো বিশ্বও এটি দেখতে চায়।’

এ সময় তিনি কোনো প্রশ্ন নিতে চান না বলে জানান। সাংবাদিকরা তারপরও ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চান। জবাবে হোয়াইটলি বলেন, ‘না, ধন্যবাদ।’

বিকেল তিনটা থেকে ৫টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠকে হোয়াইটলি ছাড়াও ইইউর সাতটি দেশের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল, অন্য ৪ নির্বাচন কমিশনার এবং ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘তারা আগেও একাধিকবার এসেছেন। তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন পর্যবেক্ষণ টিম আসবেন বলে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে চারজন এসেছেন। তারা দীর্ঘ সময় আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছেন। আমাদের প্রস্তুতিটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে এটা তারা জানতেন না। তারা আজও এসেছেন, এর মধ্যে আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে সেগুলো আমরা তাদের জানিয়েছি। আমরা আগের মতোই স্পষ্ট করে জানিয়েছি, নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার, পিসফুল এবং ক্রেডিবল যাতে হয়— সেটি নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

সিইসি বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি, আমাদের মাননীয় কমিশনাররা বিগত দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বাইরে ঘুরেছেন এবং তারা জনগণ ও প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবহিত করেছেন। যাতে করে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে; যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হয়। তারা আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এটা আমরা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ থাকে, বিভেদ-বিভাজন থাকে সেখানে কোনোভাবেই আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’

রিটার্ন দাখিলের সময় ২ মাস বাড়ানো হয়েছে

নতুন আয়কর আইন বাস্তবায়ন ও চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় আরও দুই মাস বৃদ্ধি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যক্তি শ্রেণির করদাতারা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। এছাড়া কোম্পানি করদাতার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মহিদুল ইসলাম চৌধুরী সই করা চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এর আগে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় এক মাস বৃদ্ধির জন্য এনবিআরে আবেদন করে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। আর ঢাকা ট্যাক্সবারসহ কয়েকটি মহল দুই মাস সময় বৃদ্ধির জন্য আবেদন করে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান বরাবর পৃথকভাবে তারা এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়।

চিঠিতে কারণ হিসেবে এফবিসিসিআই বলেছে, নতুন আয়কর আইন-২০২৩ প্রতিপালন ও আয়কর পরিপত্র বিলম্বে প্রকাশের কারণে এবার করদাতারা প্রস্তুতি নেওয়ার তেমন সময় পাননি। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অনেক করদাতার পক্ষেই ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব হবে না।

অন্যদিকে ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনও সময় বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে এনবিআরে চিঠি দেয়। চিঠিতে বলা হয়, বর্তমান রাজনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতিতে চলমান হরতাল-অবরোধ, আয়কর আইন-২০২৩ সম্পর্কে করদাতা ও আইনজীবীদের পরিপূর্ণ জ্ঞানের অভাব, ২০২৩-২৪ করবর্ষের পরিপত্র বিলম্বে প্রাপ্তি এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ২০২৩-২৪ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের নির্ধারিত সময় বাড়ানো প্রয়োজন।

দেশে বর্তমানে ৯৪ লাখের বেশি কর শনাক্তকারী নম্বরধারী (টিআইএন) করদাতা রয়েছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৫ লাখ ২৯ হাজার টিআইএনধারী রিটার্ন দাখিল করেছিলেন।

সময়সীমার বাইরে তফসিল পরিবর্তন আমরা মানব না

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে সংবিধানে একটি সময়সীমা আছে। সেই সময়সীমা অতিক্রম করে তফসিল পরিবর্তন আমরা কখনো সমর্থন করব না। সময়সীমাকে অতিক্রম করবে এমন কোনো পদক্ষেপ এমন কোনো পরিবর্তন আমরা মানব না।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি অবরোধ-হরতাল কার বিরুদ্ধে করছে প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা হরতাল ডাকছে কার বিরুদ্ধে, এটা তো নির্বাচনের বিরুদ্ধে; নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য এসব কর্মকাণ্ড করছে।

তিনি বলেন, আজকে যারা মানবাধিকারের কথা বলে, বাংলাদেশে সুশাসনের কথা বলে, যারা ফ্রি ফেয়ার নির্বাচনের কথা বড় গলায় বলে, তারা আজকে একটা পক্ষের এসব অপকর্ম, গণতন্ত্রবিরোধী, সংবিধান বিরোধী কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে কেন নীরব? এটা নিয়ে তো কেউ কিছু বলছে না। নির্বাচনকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়, যারা বাধা দিচ্ছে, তাদের ব্যাপারে তারা কেন নীরব? আমাদের দেশে যারা সুশীল সমাজ যারা মানবাধিকারের কথা বলে, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন।

কাদের বলেন, আমরা শুনেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে এমন কোনো কর্মকাণ্ড হলে, সেটা নির্বাচন বিরোধী কর্মকাণ্ড বলে বিবেচিত হওয়ার কথা। এখন তো সবাই নীরব। এখন কেউ কিছু বলে না। ইউরোপও কিছু বলে না, আমেরিকাও কিছু বলে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হরতাল-অবরোধকে কি কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়? পুলিশ হত্যা কি কোনোভাবে ঢেকে রাখা যায়? প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করছে, এগুলো কি অন্ধকারে ঢেকে রাখা যাবে? এগুলো তো প্রকাশ্যে হচ্ছে। আজকের বিশ্বে এখানকার খবর সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে যেতে কতক্ষণ লাগে? এখানকার কোনো খবর ল্যাটিন আমেরিকার কোনো দেশ বা আফ্রিকার কোনো দেশে পৌঁছতে কি দেরি হচ্ছে? ওয়াশিংটনে পৌঁছাতে কি দেরি হচ্ছে? এসব নিয়ে তো কোনো কথা আমরা শুনছি না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা অপকর্ম করেছে, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা তো হবেই। আপনি প্রকাশ্যে পুলিশকে খুন করেছেন, সেটার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না? তাদেরকে জেলে পাঠানো হবে না? এটা কোনো সভ্য দেশে আছে?

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে আমরা বাধ্য : সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এই বিষয়টা আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট করে বুঝিয়েছি।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাজধনীর আগারগাঁওয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

এর আগে, ইইউ’র প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিকেল ৩টায় নির্বাচন কমিশন বৈঠকে বসে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে ইইউর পক্ষে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, সংস্থাটির পলিটিক্যাল অফিসার সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন, সুইডেনের অ্যাম্বাসেডর আলেকজান্ডার বার্গ ফন লিন্দ্রে, ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, স্পেনের অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, ইতালির অ্যাম্বাসেডর আন্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসেডর ইরমা ফেন ডুয়েরেন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেম ডে কারড্রেল ও জার্মান অ্যাম্বাসির এক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে সিইসি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলিসহ ৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। এটাকে আমরা বলি ইইউ ডেলিগেশন। তারা আগেও একাধিকবার এসেছেন। তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন পর্যবেক্ষণ টিম আসবেন বলে জানিয়েছেন। ইতোমধ্যেই চারজন এসেছেন। তারা দীর্ঘ সময় আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছেন। আমাদের প্রস্তুতিটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটা তারা জানতেন না। তারা আজও এসেছেন, এর মধ্যে আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে সেগুলো আমরা তাদের জানিয়েছি। আমরা আগের মতোই স্পষ্ট করে জানিয়েছি, নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার, পিসফুল এবং ক্রেডিবল যাতে হয়— সেটি নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’

হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা তাদের জানিয়েছি, আমাদের মাননীয় কমিশনাররা বিগত দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বাইরে ঘুরেছেন এবং তারা জনগণ ও প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবহিত করেছেন। যাতে করে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে; যাতে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত হয়। তারা আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েছেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এটা আমরা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ থাকে, বিভেদ-বিভাজন থাকে সেখানে কোনভাবেই আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না।’

পদত্যাগ করা মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের শূন্য পদে দায়িত্ব বণ্টন

পদত্যাগ করা তিন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর শূন্য পদে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।

সচিব বলেন, তিনটি মন্ত্রণালয় খালি হয়েছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর পদটি শূন্য হয়েছে। সেখানে পূর্ণ মন্ত্রী থাকায় কাউকে নতুন করে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চলে যাবে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাবেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ বিষয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

উপদেষ্টাদের দায়িত্ব কাউকে বণ্টন করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা আছে জানিয়ে সচিব বলেন, এখন সরকার স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। আমাদের কাছে যদি বিবেচ্য বিষয় থাকে সেটার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক চাইব।

গত ১৯ নভেম্বর মন্ত্রিসভার তিন টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তারা হলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

এরপর আজ (২৯ নভেম্বর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিসভার টেকনোক্র্যাট তিন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ নিশ্চিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রিসভার যেসব সদস্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত নন তাদের টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী বলা হয়।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর তিন উপদেষ্টাও পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তারা হলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী।

বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী মিলিয়ে মন্ত্রিসভায় রয়েছেন মোট ৪৮ জন। এই তিনজনের পদত্যাগের মাধ্যমে মন্ত্রিসভার আকার দাঁড়াল ৪৫ জনে। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার।

গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

দলীয় এমপিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে পদত্যাগ করতে হবে না

দলীয় সংসদ সদস্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে না বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি জানায়, দলীয় হোক, নির্দলীয় হোক বা সংরক্ষিত নারী আসনের হোক, সংসদ সদস্য পদে থেকেই দলীয় এমপিরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারবেন।

বুধবার (২৯ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের জনসংযোগ শাখার পরিচালক মো. শরিফুল আলম এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, কোনো নির্দলীয় সংসদ সদস্য নির্দলীয়ভাবে বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হলে তাকে সংসদ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। তবে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করতে হলে শর্তগুলো পরিপালন করতে হবে।

মো. শরিফুল আলম জানান, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত স্বাক্ষরযুক্ত তালিকা মনোনয়নপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। তবে কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থী ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদের কোনো নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকলে তালিকার প্রয়োজন হবে না।

বিএনপি হলো ভুল ধরা পার্টি: তথ্য মন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ও তাদের মিত্ররা সমগ্র বাংলাদেশের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা এখন। আমরা কি কাজ করছি সেটাতে কোন ভুল আছে কিনা শুধু সেটা খুঁজে বেড়ায়। তারা শুধু ভুল ধরে নিজেরা কোন কাজ করে না, তাই তাদের নাম দিয়েছি আমি ভুল ধরা পার্টি।

শনিবার (০১ মে) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় তথ্য মন্ত্রীর ব্যক্তিগত উদ্যোগে করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট লকডাউন পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও দরিদ্রদের মাঝে খাদ্র্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও তাদের মিত্রদের টেলিভিশনের পর্দায় দেখা গেলেও জনগণের পাশে তারা নেই। মাঝে মধ্যে তাদের ঢাকা শহরে প্রেস ক্লাবের সামনে দেখা যায়, নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করার জন্য দেখা যায়, বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেখা যায়। অথবা ঘর থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সরকারের সমালোচনা করেন তারা।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ খেটে খাওয়া ও মেহনতি মানুষের দল। গরীব মানুষ ভোট দিয়ে আমাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে, তাই আমাদের দল গরীব মানুষের কথা ভাবে, অনেকে গরীব মানুষের কথা ভাবেনা। আমাদের দল এবং সরকার জনগণের পাশে আছে এবং থাকবে। অন্য কেউ নাই, তারা শুধু গলা ফাটায়।

রাঙ্গুনিয়া পৌরসভাস্থ মরহুম এডভোকেট নুরুচ্ছফা তালুকদার অডিটোরিয়ামে তথ্য মন্ত্রীর পারিবারিক দাতব্য প্রতিষ্ঠান এনএনকে ফাউন্ডেশন খাদ্য সামগ্রী বিতরণের আয়োজন করে। এদিন রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা, চন্দ্রঘোনা, মরিয়মনগর, পদুয়া ও শ্রীপুর-খরন্ধীপ ইউনিয়নের দুই হাজার পরিবারে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। ক্রমান্বয়ে দশ হাজার পরিবারে এসহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে।

এনএনকে ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী আবদুর রউফ মাষ্টারের সভাপতিত্বে ও এমরুল করিম রাশেদের সঞ্চালনয়ায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, ইউএনও মাসুদুর রহমান, মেয়র শাহজাহান সিকদার, রাঙ্গুনিয়া সার্কেলের এএসপি আনোয়ার হোসেন শামীম, আওয়ামী লীগ নেতা মুহাম্মদ আলী শাহ প্রমুখ।

দৃশ্যমান হলো পূর্ণাঙ্গ পদ্মা সেতু

মহান মে দিবস আজ। সবার যখন সাধারণ ছুটি এর মাঝেও থেমে ছিলো না স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঘিরে শ্রমিকদের কর্মযজ্ঞ। এই কাজে অংশ নিতে পেরে শ্রমিকরা বেজায় খুশি। কারণ স্বপ্নের সেতুর দুই প্রান্তের ৪৩৮টি সুপার গার্ডারের সবশেষ গার্ডারটিও বসছে মাওয়া প্রান্তে। এই গার্ডারটি বসার পরই সংযোগ সেতু পূর্ণাঙ্গ দৃশ্যমান হয়।

শনিবার (১ মে) এ গার্ডার বসার মধ্য দিয়ে মূল সেতুর পাশাপাশি সংযোগ সেতুর সোয়া তিন কিলোমিটারেরও বেশি দৃশ্যমান হয়।

মাওয়া প্রান্তে এই গার্ডারটি বসার পরই সংযোগ সেতু পূর্ণাঙ্গ দৃশ্যমান হয়। সংযোগ সেতু্টি পদ্মার দুই পাড়ের সঙ্গে মেলবন্ধনের সেই স্মরণীয় মুহূর্ত ঘিরে চলছে কর্মযজ্ঞ। শ্রমিকরা ৩৮ মিটার দীর্ঘ ও ৮৪ মেট্রিক টন ওজনের গার্ডারটি বসাতে কাজ করে যাচ্ছেন। সেতুর ভায়াডাক্টের মাওয়া প্রান্তে সবশেষ ৪৩৮তম সুপার গার্ডারটি বসানো হয়েছে।
মূল সেতু দৃশ্যমান হওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যেই সংযোগ সেতুও পূর্ণাঙ্গ দৃশ্যমান হচ্ছে। পুরো সেতুর অবকাঠামো মাওয়াকে জাজিরার সঙ্গে যুক্ত করছে। পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে সংযোগ সেতু ১৪৭৮ এবং জাজিরা প্রান্তে ১৬৭০ মিটার।

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজব আলী গণমাধ্যমকে বলেন, এই গার্ডারটি বসে গেলে মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তের সংযোগের আর কোনো বাধা থাকবে না এবং পদ্মা সেতু প্রকল্প আরেক ধাপ এগিয়ে গেল।

আফগানিস্তানে ইফতারির সময় গাড়িবোমা হামলা, নিহত ২৭

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে লোগার প্রদেশে গাড়িবোমা হামলায় অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৯০ জন। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি।

নিহতদের মধ্যে শিক্ষার্থীরা আছে বলে জানা গেছে। লোগার প্রদেশের রাজধানী পুয়েল–ই–আলমের একটি অতিথিশালায় এই হামলা চালানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, হামলায় অতিথিশালার ছাদ ধসে পড়েছে। ছাদের নিচে অনেকে আটকা পড়েছেন। হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ ও জরুরি উদ্ধারকারী সংস্থার কর্মীরা। আটকে পড়াদের উদ্ধার অভিযান চলছে।

শক্তিশালী এ গাড়ি বোমা হামলার সময় আশপাশের বেশ কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লগার প্রাদেশিক কাউন্সিলের প্রধান হাসিবুল্লাহ স্টেনেকজাই বলেন, হামলায় নিহতদের মধ্যে বেশ কিছু শিক্ষার্থী আছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তারিক আরিয়ান বলেন, ভয়াবহ এই হামলায় ৯০ জন আহত হয়েছেন। তাদের অনেকেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। হামলায় আশপাশের ভবন ও হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আশপাশের বেশ কিছু ভবনের ছাদ ধসে লোকজন আটকা পড়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সবাইকে উদ্ধারের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার দায় কেউ স্বীকার করেনি। তবে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহারের ঘোষণা আসার পর থেকে দেশটিতে হামলা বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগান যুদ্ধের সমাপ্তি টেনে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন।

মার্কিন সেনা প্রত্যাহার হলে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনরায় তালেবানের হাতে যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। প্রায় দুই দশক আগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযানের নামে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করেন। এই যুদ্ধে দেশটির ক্ষমতায় থাকা তালেবান সরকারের পতন হয়।